MhTechnologyPostAd

আল্লাহর ৯৯টি নাম (আসমাউল হুসনা): অর্থ, ফজিলত ও তাৎপর্য

আল্লাহর ৯৯টি নাম ও তাৎপর্য (Asmaul Husna) – একটি সম্পূর্ণ গাইড

আল্লাহর সুন্দর নামসমুহ নিয়ে ক্যালিগ্রাফি

মহাবিশ্বের স্রষ্টা, পালনকর্তা ও একচ্ছত্র অধিপতি মহান আল্লাহ তা'আলা। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর সত্তা যেমন অসীম, তেমনি তাঁর গুণাবলীও অতুলনীয়। আল্লাহকে চেনার এবং তাঁর মহত্ত্ব অনুধাবন করার অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায় হলো তাঁর সুন্দর নামসমূহ সম্পর্কে জানা, যা ‘আসমাউল হুসনা’ নামে পরিচিত। এই নামগুলো কেবল কিছু শব্দ নয়, বরং এগুলো আল্লাহর অসীম করুণা, জ্ঞান, ক্ষমতা ও সৌন্দর্যের একেকটি ঝলক।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা বলেন:

“আর আল্লাহর জন্যই রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাঁকে সেই সব নামেই ডাকো।” (সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত: ১৮০)

এই ব্লগ পোস্টে আমরা আল্লাহর ৯৯টি নামের তালিকা, তাদের অর্থ, গভীর তাৎপর্য এবং আমাদের জীবনে তার প্রভাব নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা করব। এই সম্পূর্ণ গাইডটি আপনাকে আসমাউল হুসনার জ্ঞান সমুদ্রে ডুব দিতে এবং মহান রবের সাথে আপনার সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে, ইনশাআল্লাহ।

আসমাউল হুসনা কী এবং কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

‘আসমাউল হুসনা’ (الأسماء الحسنى) একটি আরবি পরিভাষা। এখানে ‘আসমা’ শব্দের অর্থ ‘নামসমূহ’ এবং ‘হুসনা’ শব্দের অর্থ ‘সুন্দরতম’ বা ‘সর্বোত্তম’। সুতরাং, ‘আসমাউল হুসনা’ বলতে আল্লাহর সুন্দরতম ও সর্বোত্তম নামসমূহকে বোঝানো হয়। এই নামগুলো আল্লাহর সত্তা ও গুণের পরিচয় বহন করে। প্রতিটি নামই আল্লাহর পরিপূর্ণতা, মহিমা এবং অপার দয়ার এক একটি দিক উন্মোচন করে।

গুরুত্ব:

  • আল্লাহকে চেনা: আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো জানার মাধ্যমে আমরা তাঁর ক্ষমতা, দয়া, প্রজ্ঞা ও العدل (ন্যায়বিচার) সম্পর্কে জানতে পারি। যেমন, ‘আর-রহমান’ নামটি আমাদের তাঁর অসীম দয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, আবার ‘আল-জাব্বার’ নামটি তাঁর মহাশক্তির পরিচয় দেয়।
  • ঈমানকে শক্তিশালী করা: যখন একজন বিশ্বাসী আল্লাহর নাম ও তার অর্থ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে, তখন তার হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, ভয় ও ভরসা বৃদ্ধি পায়। এটি ঈমানকে মজবুত করার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম।
  • সঠিকভাবে দোয়া করা: আসমাউল হুসনা ব্যবহার করে দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন, ক্ষমা প্রার্থনার সময় ‘ইয়া গাফফার’, ‘ইয়া তাওয়াব’ বলে ডাকা, অথবা রিজিক বৃদ্ধির জন্য ‘ইয়া রাজ্জাক’ বলে দোয়া করা। কুরআন আমাদের এই পদ্ধতিই শেখায়।
  • উত্তম চরিত্র গঠন: আল্লাহর গুণাবলী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের চরিত্রকে সুন্দর করা যায়। যেমন, ‘আল-আফুউ’ (অধিক ক্ষমাকারী) নামের তাৎপর্য অনুধাবন করে আমরা অন্যকে ক্ষমা করতে শিখি। ‘আস-সবুর’ (অত্যন্ত ধৈর্যশীল) নাম থেকে আমরা ধৈর্য ধারণের শিক্ষা পাই।

আল্লাহর ৯৯টি নাম জানা ও মুখস্থ করার ফজিলত

আল্লাহর ৯৯টি নাম জানা, বোঝা এবং মুখস্থ করার ফজিলত অপরিসীম। এ বিষয়ে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হাদিসটি হলো:

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলার ৯৯টি নাম রয়েছে, অর্থাৎ এক কম একশত। যে ব্যক্তি এই নামগুলো গণনা (মুখস্থ ও আত্মস্থ) করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)

এখানে ‘গণনা করা’ বা আরবিতে ‘ইহসা’ (أَحْصَاهَا) শব্দটি শুধু তোতাপাখির মতো মুখস্থ করাকে বোঝায় না। ইসলামিক স্কলারগণ এর তিনটি স্তর বর্ণনা করেছেন:

  1. মুখস্থ করা: প্রথমত, নামগুলো এবং তাদের অর্থ মুখস্থ করা।
  2. অর্থ ও তাৎপর্য বোঝা: প্রতিটি নামের গভীর অর্থ এবং আল্লাহর কোন গুণটি এর মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে তা বোঝা।
  3. জীবনে প্রতিফলন ঘটানো: সেই নামগুলোর দাবি অনুযায়ী নিজের জীবনকে পরিচালনা করা। অর্থাৎ, আল্লাহর গুণাবলীর আলোকে নিজের চরিত্র ও আমলকে সাজানো এবং দোয়া ও জিকিরে সেই নামগুলো ব্যবহার করা।

সুতরাং, যে ব্যক্তি এই তিনটি স্তর পূরণ করে আল্লাহর নামসমূহকে আত্মস্থ করতে পারবে, তার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে। এটি আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায় এবং জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।

আল্লাহর ৯৯টি নামের পূর্ণাঙ্গ তালিকা, অর্থ ও বিস্তারিত তাৎপর্য

এখানে আল্লাহর ৯৯টি নামের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেওয়া হলো। প্রতিটি নামের আরবি, বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত কিন্তু গভীর তাৎপর্য তুলে ধরা হয়েছে, যা আপনাকে নামগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।

নং আরবি নাম বাংলা উচ্চারণ অর্থ সংক্ষিপ্ত তাৎপর্য
الله আল্লাহ আল্লাহ (একক উপাস্য) সর্বশ্রেষ্ঠ নাম, যা আল্লাহর সত্তার পরিচয় দেয় এবং অন্য সকল গুণবাচক নাম এই নামের অধীন।
الرَّحْمَنُ আর-রহমান পরম দয়ালু যাঁর দয়া কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সকল সৃষ্টির জন্য প্রযোজ্য, চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম।
الرَّحِيمُ আর-রহীম অসীম করুণাময় যাঁর করুণা বিশেষভাবে মু'মিনদের জন্য পরকালে প্রকাশ পাবে। তিনি বিশ্বাসীদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান।
الْمَلِكُ আল-মালিক সর্বাধিকারী, বাদশাহ যিনি মহাবিশ্বের সত্যিকারের বাদশাহ। তাঁর ক্ষমতার উপরে আর কোনো ক্ষমতা নেই এবং সকল কিছুই তাঁর অধীন।
الْقُدُّوسُ আল-কুদ্দুস পরম পবিত্র যিনি সকল প্রকার ত্রুটি, অপূর্ণতা ও সৃষ্টির গুণাবলী থেকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র ও মুক্ত।
السَّلَامُ আস-সালাম শান্তিদাতা যিনি নিজে শান্তিময় এবং তাঁর কাছ থেকেই সকল শান্তি আসে। তিনি তাঁর বান্দাদের শান্তি ও নিরাপত্তা দান করেন।
الْمُؤْمِنُ আল-মু'মিন নিরাপত্তাদাতা, ঈমান দানকারী যিনি তাঁর অনুগত বান্দাদের নিরাপত্তা দান করেন এবং অন্তরে ঈমানের আলো জ্বালিয়ে দেন।
الْمُهَيْمِنُ আল-মুহাইমিন রক্ষক, পর্যবেক্ষক যিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতিটি বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন এবং সবকিছু তাঁর নিয়ন্ত্রণে রেখে রক্ষণাবেক্ষণ করেন।
الْعَزِيزُ আল-আযীয সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী যিনি এতটাই শক্তিশালী যে কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারে না। সকল সম্মান ও ক্ষমতা তাঁরই।
১০ الْجَبَّارُ আল-জাব্বার প্রবল, পরাক্রান্ত যিনি তাঁর ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম এবং ভাঙ্গা জিনিসকে জোড়া লাগাতে পারেন। তিনি সবকিছুকে তাঁর নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
১১ الْمُتَكَبِّرُ আল-মুতাকাব্বির অহংকারের অধিকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ যাঁর জন্য অহংকার ও গৌরব শোভা পায়। তিনিই একমাত্র সত্তা যিনি সত্যিকারের বড়ত্বের অধিকারী।
১২ الْخَالِقُ আল-খালিক সৃষ্টিকর্তা যিনি অস্তিত্বহীন অবস্থা থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রতিটি সৃষ্টির রূপरेखा নির্ধারণ করেছেন।
১৩ الْبَارِئُ আল-বারী উদ্ভাবনকর্তা যিনি কোনো পূর্ব নমুনা ছাড়াই নিখুঁতভাবে সৃষ্টি করেন এবং আত্মাকে তার দেহে স্থাপন করেন।
১৪ الْمُصَوِّرُ আল-মুসাওবির আকৃতিদানকারী যিনি মাতৃগর্ভে প্রতিটি সৃষ্টিকে তার ইচ্ছামতো স্বতন্ত্র ও সুন্দর আকৃতি দান করেন।
১৫ الْغَفَّارُ আল-গাফফার অত্যধিক ক্ষমাকারী যিনি বারবার ক্ষমা করেন। বান্দা যতবারই ভুল করে তওবা করে, তিনি ততবারই ক্ষমা করে দেন।
১৬ الْقَهَّارُ আল-কাহহার অপ্রতিরোধ্য, দমনকারী যাঁর ক্ষমতার সামনে সবকিছুই নতজানু। তিনি তাঁর শত্রুদের দমন করেন এবং সবকিছু তাঁর অধীনস্থ।
১৭ الْوَهَّابُ আল-ওয়াহহাব মহাদাতা যিনি কোনো প্রতিদান ছাড়াই অকাতরে দান করেন। তাঁর দান অফুরন্ত।
১৮ الرَّزَّاقُ আর-রাজ্জাক রিজিকদাতা যিনি তাঁর সকল সৃষ্টির জন্য রিজিকের ব্যবস্থা করেন, ক্ষুদ্র পিপীলিকা থেকে শুরু করে বিশাল তিমি পর্যন্ত।
১৯ الْفَتَّاحُ আল-ফাত্তাহ উন্মোচনকারী, বিজয়দানকারী যিনি তাঁর বান্দাদের জন্য রহমত ও রিজিকের বন্ধ দরজা খুলে দেন এবং সত্য ও মিথ্যার মধ্যে ফয়সালা করেন।
২০ الْعَلِيمُ আল-আলীম সর্বজ্ঞ যিনি সবকিছু জানেন। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ, প্রকাশ্য বা গোপন কোনো কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়।
২১ الْقَابِضُ আল-কাবিদ সংকোচনকারী যিনি তাঁর হিকমত অনুযায়ী কারো রিজিক বা জীবনকে সংকুচিত করেন।
২২ الْبَاسِطُ আল-বাসিত সম্প্রসারণকারী যিনি তাঁর দয়ায় কারো রিজিক বা জীবনকে প্রসারিত করে দেন।
২৩ الْخَافِضُ আল-খাফিদ অবনতকারী যিনি অহংকারী ও সীমালঙ্ঘনকারীদের অপমানিত ও অবনত করেন।
২৪ الرَّافِعُ আর-রাফি' উন্নতকারী যিনি তাঁর অনুগত বান্দাদের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।
২৫ الْمُعِزُّ আল-মু'ইয সম্মানদাতা যিনি যাকে ইচ্ছা সম্মান ও মর্যাদা দান করেন। সকল সম্মান তাঁরই হাতে।
২৬ الْمُذِلُّ আল-মুযিল অপমানকারী যিনি তাঁর হিকমত অনুযায়ী যাকে ইচ্ছা অপমানিত ও লাঞ্ছিত করতে পারেন।
২৭ السَّمِيعُ আস-সামী' সর্বশ্রোতা যিনি সবকিছু শোনেন। রাতের আঁধারে পিপীলিকার পদধ্বনিও তাঁর কাছে গোপন নয়।
২৮ الْبَصِيرُ আল-বাসীর সর্বদ্রষ্টা যিনি সবকিছু দেখেন। তাঁর দৃষ্টির আড়ালে মহাবিশ্বের কোনো কিছুই নেই।
২৯ الْحَكَمُ আল-হাকাম বিচারক, মীমাংসাকারী যিনি চূড়ান্ত বিচারক এবং তাঁর বিচারই সবচেয়ে ন্যায়সঙ্গত ও নিখুঁত।
৩০ الْعَدْلُ আল-আদল পরম ন্যায়পরায়ণ যিনি তাঁর সৃষ্টি ও বিচারে বিন্দুমাত্র অবিচার করেন না। তাঁর প্রতিটি কাজই ন্যায়বিচারের উপর প্রতিষ্ঠিত।
৩১ اللَّطِيفُ আল-লাতীফ সূক্ষ্মদর্শী, অমায়িক যিনি অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিষয় সম্পর্কেও অবগত এবং তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু ও অমায়িক।
৩২ الْخَبِيرُ আল-খাবীর সর্ববিষয়ে অবগত যিনি সবকিছুর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক অবস্থা সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান রাখেন।
৩৩ الْحَلِيمُ আল-হালীম অত্যন্ত সহনশীল যিনি বান্দার পাপ ও অবাধ্যতা সত্ত্বেও শাস্তি দিতে তাড়াহুড়ো করেন না, বরং তওবার সুযোগ দেন।
৩৪ الْعَظِيمُ আল-আযীম সুমহান যাঁর মহত্ত্ব ও বড়ত্ব কল্পনা করাও সম্ভব নয়। আসমান ও জমিনের সবকিছুই তাঁর তুলনায় নগণ্য।
৩৫ الْغَفُورُ আল-গফুর পরম ক্ষমাশীল যিনি বান্দার বড় বড় গুনাহও ক্ষমা করে দেন যখন সে আন্তরিকভাবে তওবা করে।
৩৬ الشَّكُورُ আশ-শাকুর গুণগ্রাহী, প্রতিদানদাতা যিনি বান্দার ছোট আমলেরও অনেক বড় প্রতিদান দেন এবং কৃতজ্ঞতাকে পছন্দ করেন।
৩৭ الْعَلِيُّ আল-আলিই সুমহান, সর্বোচ্চ যাঁর মর্যাদা ও অবস্থান সবার উপরে। কোনো কিছুই তাঁর চেয়ে মহান নয়।
৩৮ الْكَبِيرُ আল-কাবীর সুমহান, সর্বশ্রেষ্ঠ যিনি সত্তা ও গুণে সবচেয়ে বড়। তাঁর চেয়ে বড় আর কেউ নেই।
৩৯ الْحَفِيظُ আল-হাফীয মহারক্ষক যিনি মহাবিশ্বের সবকিছুকে ধ্বংস হওয়া থেকে রক্ষা করেন এবং তাঁর বান্দাদের বিপদ থেকে হিফাজত করেন।
৪০ الْمُقِيتُ আল-মুকীত আহার্যদানকারী, তত্ত্বাবধায়ক যিনি সকল সৃষ্টির জন্য খাদ্য ও শক্তির জোগান দেন এবং তাদের তত্ত্বাবধান করেন।
৪১ الْحَسِيبُ আল-হাসীব হিসাব গ্রহণকারী, যথেষ্ট যিনি তাঁর বান্দাদের জন্য যথেষ্ট এবং কিয়ামতের দিন তিনি সকলের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব নেবেন।
৪২ الْجَلِيلُ আল-জালীল মহিমান্বিত, প্রতাপশালী যিনি গুণাবলীতে মহিমান্বিত এবং যাঁর সত্তা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ।
৪৩ الْكَرِيمُ আল-কারীম মহা উদার, সম্মানিত যিনি না চাইতেও দান করেন এবং যাঁর দান কখনো শেষ হয় না। তিনি অত্যন্ত সম্মানিত।
৪৪ الرَّقِيبُ আর-রকীব সতর্ক পর্যবেক্ষক যিনি সবসময় সবকিছু দেখছেন এবং বান্দার প্রতিটি কাজ ও চিন্তা সম্পর্কে অবগত।
৪৫ الْمُجِيبُ আল-মুজীব প্রার্থনা কবুলকারী যিনি তাঁর বান্দার ডাকে সাড়া দেন এবং তাদের দোয়া কবুল করেন।
৪৬ الْوَاسِعُ আল-ওয়াসি' সর্বব্যাপী, অসীম যাঁর জ্ঞান, দয়া এবং ক্ষমতা অসীম ও সর্বব্যাপী। কোনো কিছুই তাঁকে সীমাবদ্ধ করতে পারে না।
৪৭ الْحَكِيمُ আল-হাকীম পরম প্রজ্ঞাময় যাঁর প্রতিটি কাজ, আদেশ ও সৃষ্টি গভীর প্রজ্ঞা ও যুক্তিতে পরিপূর্ণ।
৪৮ الْوَدُودُ আল-ওয়াদুদ প্রেমময়, স্নেহশীল যিনি তাঁর অনুগত বান্দাদের ভালোবাসেন এবং তাদের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল।
৪৯ الْمَجِيدُ আল-মাজীদ মহাগৌরবান্বিত যাঁর গৌরব, সম্মান ও মর্যাদা সর্বোচ্চ।
৫০ الْبَاعِثُ আল-বা'ইছ পুনরুত্থানকারী যিনি মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন সকল সৃষ্টিকে পুনরায় জীবিত করবেন।
৫১ الشَّهِيدُ আশ-শাহীদ প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী যিনি সবকিছুর সাক্ষী। কোনো কিছুই তাঁর অগোচরে ঘটে না।
৫২ الْحَقُّ আল-হক সত্য, চিরস্থায়ী যাঁর অস্তিত্বই একমাত্র সত্য এবং তিনি চিরস্থায়ী।
৫৩ الْوَكِيلُ আল-ওয়াকীল কর্মবিধায়ক, তত্ত্বাবধায়ক যাঁর উপর ভরসা করা যায় এবং যিনি সকল কিছুর দায়িত্ব গ্রহণকারী।
৫৪ الْقَوِيُّ আল-কাবিই শক্তিশালী যিনি পরিপূর্ণ শক্তির অধিকারী এবং কখনো দুর্বল হন না।
৫৫ الْمَتِينُ আল-মাতীন সুদৃঢ়, স্থির যাঁর শক্তি অত্যন্ত দৃঢ় এবং কখনো হ্রাস পায় না।
৫৬ الْوَلِيُّ আল-ওয়ালিই অভিভাবক, বন্ধু যিনি মু'মিনদের বন্ধু ও অভিভাবক, তিনি তাদের সাহায্য ও রক্ষা করেন।
৫৭ الْحَمِيدُ আল-হামীদ প্রশংসিত যিনি সকল প্রশংসার যোগ্য, বান্দা প্রশংসা করুক বা না করুক।
৫৮ الْمُحْصِي আল-মুহসী হিসাবরক্ষক যিনি মহাবিশ্বের প্রতিটি কণার হিসাব রাখেন, কোনো কিছুই তাঁর হিসাবের বাইরে নয়।
৫৯ الْمُبْدِئُ আল-মুবদি' সূচনাকারী যিনি প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন, কোনো পূর্ব নমুনা ছাড়াই।
৬০ الْمُعِيدُ আল-মু'ईद পুনঃসৃষ্টিকারী যিনি ধ্বংসের পর পুনরায় সবকিছুকে সৃষ্টি করবেন।
৬১ الْمُحْيِي আল-মুহইয়ী জীবনদানকারী যিনি প্রাণহীন বস্তুকে জীবন দান করেন।
৬২ الْمُمِيتُ আল-মুমীত মৃত্যুদানকারী যিনি সকল প্রাণের মৃত্যু ঘটান। জীবন ও মৃত্যু তাঁরই নিয়ন্ত্রণে।
৬৩ الْحَيُّ আল-হাইয়্যু চিরঞ্জীব যিনি চিরকাল জীবিত এবং যাঁর কোনো শুরু বা শেষ নেই।
৬৪ الْقَيُّومُ আল-কাইয়্যুম চিরস্থায়ী, সবকিছুর ধারক যিনি নিজে قائم (বিদ্যমান) এবং আসমান ও জমিনের সবকিছুকে ধারণ করে রেখেছেন।
৬৫ الْوَاجِدُ আল-ওয়াজিদ চিরবিদ্যমান, ঐশ্বর্যবান যিনি সবকিছু পান এবং যাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।
৬৬ الْمَاجِدُ আল-মাজিদ মহিমান্বিত যাঁর সম্মান, মর্যাদা ও মহিমা সর্বোচ্চ। (আল-মাজীদের সমার্থক)।
৬৭ الْوَاحِدُ আল-ওয়াহিদ এক ও অদ্বিতীয় যিনি তাঁর সত্তা ও গুণে এক। তাঁর কোনো শরীক বা সমকক্ষ নেই।
৬৮ الْأَحَدُ আল-আহাদ একক যিনি সত্তাগতভাবে এক, অবিভাজ্য। এটি তাওহীদের চূড়ান্ত প্রকাশ।
৬৯ الصَّمَدُ আস-সামাদ অমুখাপেক্ষী যিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, কিন্তু সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী।
৭০ الْقَادِرُ আল-কাদির সর্বশক্তিমান যিনি সবকিছু করতে সক্ষম। কোনো কিছুই তাঁর ক্ষমতার বাইরে নয়।
৭১ الْمُقْتَدِرُ আল-মুকতাদির সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী যাঁর ক্ষমতা নিখুঁত ও পরিপূর্ণ। তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন।
৭২ الْمُقَدِّمُ আল-মুকাদ্দিম অগ্রবর্তীকারী যিনি তাঁর হিকমত অনুযায়ী যাকে ইচ্ছা এগিয়ে দেন।
৭৩ الْمُؤَخِّرُ আল-মুআখখির পশ্চাদবর্তীকারী যিনি তাঁর হিকমত অনুযায়ী যাকে ইচ্ছা পিছিয়ে দেন।
৭৪ الْأَوَّلُ আল-আউয়াল প্রথম যাঁর আগে কিছু ছিল না। তিনিই সবকিছুর শুরু।
৭৫ الْآخِرُ আল-आखির শেষ যাঁর পরে কিছু থাকবে না। তিনিই সবকিছুর শেষ।
৭৬ الظَّاهِرُ আয-যাহির প্রকাশ্য যাঁর অস্তিত্ব অসংখ্য নিদর্শনের মাধ্যমে সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য।
৭৭ الْبَاطِنُ আল-বাতিন গোপন যিনি দৃষ্টির আড়ালে, কিন্তু তাঁর জ্ঞান সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছে।
৭৮ الْوَالِي আল-ওয়ালী একমাত্র অধিপতি যিনি সমগ্র বিশ্বের শাসক ও অধিপতি।
৭৯ الْمُتَعَالِي আল-মুতা'আলী সর্বোচ্চে অবস্থানকারী যিনি সৃষ্টির সকল গুণ ও বৈশিষ্ট্য থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।
৮০ الْبَرُّ আল-বার্ পরম উপকারী, কল্যাণময় যিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু এবং তাদের জন্য কল্যাণ ও অনুগ্রহ করেন।
৮১ التَّوَّابُ আত-তাওয়াব তওবা কবুলকারী যিনি বান্দাকে তওবা করার তাওফিক দেন এবং তাদের তওবা কবুল করেন।
৮২ الْمُنْتَقِمُ আল-মুনতাকিম প্রতিশোধ গ্রহণকারী যিনি অপরাধী ও সীমালঙ্ঘনকারীদের থেকে তাঁর ನ್ಯಾಯ অনুযায়ী প্রতিশোধ গ্রহণ করেন।
৮৩ الْعَفُوُّ আল-আফুউ পরম মার্জনাকারী যিনি পাপের চিহ্ন পর্যন্ত মুছে দিয়ে ক্ষমা করেন। তাঁর ক্ষমা গাফুরের চেয়েও ব্যাপক।
৮৪ الرَّءُوفُ আর-রউফ পরম স্নেহশীল যাঁর দয়া ও করুণা সর্বোচ্চ পর্যায়ের। তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত কোমল।
৮৫ مَالِكُ الْمُلْكِ মালিকুল মুলক সর্বভৌম ক্ষমতার মালিক যিনি সমগ্র রাজত্বের একচ্ছত্র অধিপতি। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং যার থেকে ইচ্ছা কেড়ে নেন।
৮৬ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ যুল-জালালি ওয়াল-ইকরাম মহিমান্বিত ও মহানুভবতার অধিকারী যিনি একাধারে প্রতাপ, মহিমা এবং অসীম দয়া ও সম্মানের অধিকারী।
৮৭ الْمُقْسِطُ আল-মুকসিত ন্যায়বিচারক যিনি তাঁর বিচারে পরিপূর্ণ ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেন এবং মজলুমকে তার حق ফিরিয়ে দেন।
৮৮ الْجَامِعُ আল-জামি' একত্রকারী যিনি কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে হিসাব-নিকাশের জন্য একত্রিত করবেন।
৮৯ الْغَنِيُّ আল-গনিই ঐশ্বর্যবান, অমুখাপেক্ষী যিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, বরং সকল সৃষ্টি তাঁর মুখাপেক্ষী।
৯০ الْمُغْنِي আল-মুগনী ঐশ্বর্যদানকারী যিনি তাঁর বান্দাদের যা ইচ্ছা তা দিয়ে অভাবমুক্ত করেন।
৯১ الْمَانِعُ আল-মানি' প্রতিরোধকারী যিনি তাঁর হিকমত অনুযায়ী কোনো কিছু হওয়া থেকে বিরত রাখেন বা কারো কাছে পৌঁছাতে বাধা দেন।
৯২ الضَّارُّ আদ-দার ক্ষতি করার ক্ষমতার অধিকারী যিনি তাঁর হিকমত অনুযায়ী ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখেন (অন্যকে শিক্ষা বা পরীক্ষা করার জন্য)।
৯৩ النَّافِعُ আন-নাফি' উপকার করার ক্ষমতার অধিকারী যিনি সকল কল্যাণের উৎস এবং তাঁর ইচ্ছাতেই সকল উপকার সাধিত হয়।
৯৪ النُّورُ আন-নূর জ্যোতি যিনি আসমান ও জমিনের নূর। তিনি তাঁর নূর দ্বারা যাকে ইচ্ছা পথ দেখান।
৯৫ الْهَادِي আল-হাদী পথপ্রদর্শক যিনি তাঁর সৃষ্টিকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন এবং হিদায়াত দান করেন।
৯৬ الْبَدِيعُ আল-বাদী' অনুপম সৃষ্টিকর্তা যিনি কোনো পূর্ব নমুনা ছাড়াই অভূতপূর্ব ও বিস্ময়কর জিনিস সৃষ্টি করেন।
৯৭ الْبَاقِي আল-বাকী চিরস্থায়ী যিনি চিরকাল থাকবেন। সকল সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে গেলেও তিনি অবশিষ্ট থাকবেন।
৯৮ الْوَارِثُ আল-ওয়ারিস উত্তরাধিকারী সকল সৃষ্টি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর একমাত্র তিনিই সবকিছুর মালিক ও উত্তরাধিকারী হিসেবে থাকবেন।
৯৯ الرَّشِيدُ আর-রশীদ সঠিক পথ প্রদর্শনকারী যিনি তাঁর বান্দাদের সঠিক ও নির্ভুল পথে পরিচালিত করেন। তাঁর সকল সিদ্ধান্তই প্রজ্ঞাপূর্ণ।
১০০ الصَّبُورُ আস-সবুর অত্যন্ত ধৈর্যশীল যিনি পাপীদের শাস্তি দিতে তাড়াহুড়ো করেন না, বরং ধৈর্য ধারণ করেন এবং তাদের ফিরে আসার সুযোগ দেন।

দ্রষ্টব্য: বিভিন্ন হাদিস ও আলেমদের বর্ণনায় নামের ক্রম বা কিছু নামের মধ্যে সামান্য পার্থক্য দেখা যায়, তবে মূল নামগুলো প্রায় একই। এখানে সর্বাধিক প্রচলিত একটি তালিকা প্রদান করা হলো। কিছু বর্ণনায় ৯৯টি নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং 'আস-সবুর' নামটি অতিরিক্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। আল্লাহই ভালো জানেন।

দৈনন্দিন জীবনে আসমাউল হুসনার প্রতিফলন কীভাবে ঘটাব?

আল্লাহর নামগুলো শুধু মুখস্থ বা পাঠ করার বিষয় নয়, বরং এগুলোকে জীবনে ধারণ করার বিষয়। নিচে কিছু বাস্তব উদাহরণ দেওয়া হলো:

  • যখন আপনি ভুল করেন: যখন কোনো ভুল বা পাপ হয়ে যায়, তখন হতাশ না হয়ে আল্লাহর ‘আল-গাফফার’ (অত্যধিক ক্ষমাকারী), ‘আত-তাওয়াব’ (তওবা কবুলকারী) এবং ‘আল-আফুউ’ (পরম মার্জনাকারী) নামগুলো স্মরণ করুন। আন্তরিকভাবে বলুন, “ইয়া গাফফার, আমাকে ক্ষমা করুন।”
  • যখন আপনি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত: রিজিক বা ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হলে আল্লাহর ‘আর-রাজ্জাক’ (রিজিকদাতা) এবং ‘আল-ফাত্তাহ’ (উন্মোচনকারী) নাম স্মরণ করুন। বিশ্বাস রাখুন যে, যিনি পাখিকে খাবার দেন, তিনি আপনার ব্যবস্থাও করবেন।
  • যখন আপনি অসুস্থ: অসুস্থ হলে ‘আশ-শাফী’ (আরোগ্যদানকারী, যা কুরআনে বর্ণিত একটি গুণ) নাম স্মরণ করে দোয়া করুন। বিশ্বাস রাখুন যে, সকল আরোগ্য তাঁরই হাতে।
  • যখন কেউ আপনার সাথে অন্যায় করে: প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে আল্লাহর ‘আল-হালীম’ (সহনশীল) ও ‘আল-আফুউ’ (ক্ষমাশীল) গুণের কথা ভাবুন এবং ক্ষমা করার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন, আল্লাহ ন্যায়বিচারক (‘আল-হাকাম’), তিনি চূড়ান্ত ফয়সালা করবেন।
  • যখন আপনি কোনো সৃষ্টি দেখেন: আকাশ, পাহাড়, বা একটি ক্ষুদ্র ফুল দেখে আল্লাহর ‘আল-খালিক’ (সৃষ্টিকর্তা), ‘আল-বারী’ (উদ্ভাবনকর্তা) ও ‘আল-মুসাওবির’ (আকৃতিদানকারী) নামের মহিমা উপলব্ধি করুন। বলুন, “সুবহানাল্লাহ”।
  • যখন আপনি ক্ষমতাবান হন: কোনো দায়িত্ব বা ক্ষমতা পেলে আল্লাহর ‘আল-আদল’ (ন্যায়পরায়ণ) গুণকে স্মরণ করুন এবং অধীনস্থদের সাথে ইনসাফ করুন। অহংকার না করে ‘আল-মুতাকাব্বির’ (একমাত্র অহংকারের অধিকারী) আল্লাহকে ভয় করুন।

উপসংহার

আল্লাহর সুন্দরতম নামসমূহ বা আসমাউল হুসনা হলো জ্ঞান ও হিদায়াতের এক মহাসাগর। এই নামগুলো নিয়ে যত বেশি চিন্তা-ভাবনা করা যায়, ততই আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, معرفة (পরিচয়) ও নৈকট্য বৃদ্ধি পায়। এটি শুধু একটি তালিকা নয়, বরং এটি হলো মহান রবের সাথে সংযোগ স্থাপনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম এবং একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধানের চাবিকাঠি।

আসুন, আমরা এই বরকতময় নামগুলো শিখি, এদের অর্থ বুঝি এবং আমাদের দোয়া, জিকির ও দৈনন্দিন জীবনে এগুলোর প্রতিফলন ঘটাই। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে তাঁর নামসমূহের গভীর জ্ঞান অর্জন করার এবং সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

সাধারণ জিজ্ঞাস্য (FAQ)

প্রশ্ন ১: আল্লাহর নাম কি শুধু ৯৯টি?

উত্তর: না, আল্লাহর গুণবাচক নাম অসীম। প্রসিদ্ধ হাদিসে যে ৯৯টি নামের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো সর্বাধিক পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। ইমাম নববী (রহ.) এর মতো অনেক আলেম বলেছেন, এই ৯৯টি নাম হলো সেই নামসমূহ যার মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকলে তিনি সবচেয়ে বেশি খুশি হন এবং এর মাধ্যমে জান্নাত লাভ করা যায়। কিন্তু আল্লাহর নাম এই সংখ্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।

প্রশ্ন ২: শুধু নামগুলো মুখস্থ করলেই কি জান্নাত পাওয়া যাবে?

উত্তর: হাদিসে ব্যবহৃত ‘ইহসা’ (أَحْصَاهَا) শব্দের অর্থ শুধু মুখস্থ করা নয়। এর অর্থ হলো নামগুলো মুখস্থ করা, সেগুলোর অর্থ ও তাৎপর্য বোঝা এবং সেই নামগুলোর দাবি অনুযায়ী নিজের জীবনে আমল করা। যেমন, ‘আর-রাজ্জাক’ নামের উপর বিশ্বাস রেখে অবৈধ উপার্জন থেকে বিরত থাকা। সুতরাং, পূর্ণাঙ্গ প্রতিদানের জন্য বোঝা ও আমল করা অপরিহার্য।

প্রশ্ন ৩: আসমাউল হুসনা দিয়ে কীভাবে দোয়া করব?

উত্তর: আপনার প্রয়োজনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাম ব্যবহার করে দোয়া করা উত্তম। যেমন:

  • ক্ষমা চাইতে হলে বলুন: ‘ইয়া গাফফার, ইয়া আফুউ’।
  • রিজিক চাইতে হলে বলুন: ‘ইয়া রাজ্জাক, ইয়া ওয়াহহাব’।
  • জ্ঞান চাইতে হলে বলুন: ‘ইয়া আলীম, ইয়া হাকীম’।
  • বিপদে সাহায্য চাইতে হলে বলুন: ‘ইয়া মুজীব, ইয়া ওয়াকীল’।
এইভাবে দোয়া করলে তা আরও শক্তিশালী ও কবুল হওয়ার উপযোগী হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

See Previous Post See Next Post
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
💬 Support
💬 Live Support

যোগাযোগ করতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন:

×

Welcome to Mh Technology

Thanks for visiting! 'This is Mh Technology All types of Technology Related Blog, All Phone Review, Free Software, Free WordPress Theme And Plugin are upload on the website.!